শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের) ঐতিহাসিক ভাষণটির তাৎপর্য মূল্যায়ন কর।
অথবা, ঐীতহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
অথবা, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণের প্রভাব আলোচনা কর।
উত্তরা। ভূমিকা : ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালির জাতীয় জীবনে একটি অবিস্মরণীয় দিন হিসেবে পরিগণিত। ঐ দিনই রেসকোর্স ময়দান যা বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নামে পরিচিত। যেখানে লক্ষ জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের সমাবেশে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশ্য এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন যে ভাষণে ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে দিকনির্দেশনা।
৭ মার্চ ভাষণ: ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের উত্তাল জনসমুদ্রের সভামঞ্চে সম্মোহনী নেতৃত্বের অধিকারী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের আহ্বান জানান। মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ২৩ বছরের রাজনীতি ও বাঙালিদের বঞ্চনার ইতিহাস ব্যাখ্যা, পাকিস্তানি রাষ্ট্রের সাথে বাঙালিদের সংঘাতের স্বরূপ উপস্থাপন করেন। সারা বাংলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ দেন, ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার নির্দেশ প্রদান করেন। গেরিলা কৌশল অবলম্বন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার পরামর্শ দেন। তিনি ঘোষণা দেন যে, “ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দিব। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। জয় বাংলা।
মূল্যায়ন : বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল একজন দক্ষ কৌশলীর সুনিপুণ বক্তব্য। এ ভাষণের মধ্যে চারটি দিকনির্দেশনা ছিল। তিনি অত্যন্ত সুকৌশলে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ভাষণ ছিল বাঙালির মুক্তির মূলমন্ত্র।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর অন্যতম একটি ভাষণ। এ ভাষণকে আব্রাহাম লিংকনের গ্যার্টিসবার্গ বক্তৃতার সাথে তুলনা করা হয়। শেখ মুজিবের ভাষণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল্যবান দলিল।