ভয়াবহ বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার এখন একটি বড় আতঙ্কের নাম এবং এই ভয়ংকর সাপটির এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা বাংলাদেশে। প্রায় অনেক জায়গায় এই সাতটির দেখা মিলেছে বিশেষ করে বরেন্দ্র এলাকা দেখা মিলছে এই সাপ বরিশাল পটুয়াখালী চাঁদপুর এমনকি ঢাকার আশেপাশেও দেখা যাচ্ছে এই রাসেলস ভাইপার নামক ভয়ংকর সাপকে। এই সাপের কামড়ে মারা গেছেন 10 জন চলতি বছরে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে এই সাপটির প্রাদুর্ভাব বেড়েছে মূলত খাদ্য শৃংখল নষ্ট হওয়ায়। তাই কৃষকদের উচিত গামবুট পড়ে কাজ করা।
রাসেলস ভাইপার কিছুটা অজগরের বাচ্চার মত দেখতে। এবং দৈর্ঘ্যের তিল থেকে ৫ ফুট লেজের দিকে সরু হয়ে থাকে।
রাসেল ভাইপার একটি মাঝারি থেকে বড় সাপ। এটির শরীর মোটা এবং শরীরের ওপর বড় বড় থলের মতো আঁশ থাকে। সাধারণত এটির রং হলুদাভ বা ধূসরাভ, তবে ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন রঙের হতে পারে। রাসেল ভাইপারের শরীরে ডিম্বাকৃতি বা গোলাকার বাদামী চিহ্ন থাকে, যেগুলি একটার পর একটা সারিবদ্ধভাবে থাকে। এই চিহ্নগুলির মধ্যে কালো এবং সাদা সীমানা থাকে, যা তাদের স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে
সরকারি তথ্য অনুযায়ী রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে মারা গেছেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের চর এলাকার তিনজন। যা হয়েছে গত তিন মাসে। এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে একটি রাজধানীতেও ঢুকতে পারে। অতীত বিচরণ বেড়েছে গত দুই তিন বছর ধরে চরম আকারে।
তবে তথ্য বলছে এই সাপটি গত কয়েক বছরের তার চরিত্র বদলেছে এবং এই সাপটি বিরূপ পরিবেশ ও মানিয়ে চলতে সক্ষম হচ্ছে এর ফলে বিভিন্ন এলাকায় এই সাতটি বহুগুনে বেড়ে গেছে। তাছাড়া এই সাপের প্রজনন ক্ষমতাও ভালো। যেখানে অন্যান্য সাপ ডিম পাড়ে বাচ্চা দেয় সেখানে এই সাপটি সরাসরি বাচ্চা প্রদান করে থাকে এবং ৪০ থেকে ৮০ টি বাচ্চা দিয়ে থাকে এই সাপটি।
অন্যান্য সাপ যেখানে মানুষ দেখলে ভয় পায় সেখানে এই সাপটি ভয় পেলে কুণ্ডলী পাকিয়ে মানুষদের তেড়ে আসে কামড় দিতে এবং জায়গা মত কামড় বসায়।
সাপ-সংশ্লিষ্টরা বলছেন যে লোকালয়ে খুবই কম দেখা যায় রাসেল ভাইপার সাপকে। শুধুমাত্র বাচ্চা দেওয়ার কারণে সব লোকালয়ে আসে এবং স্ত্রী সাত ডিম দেয় না সরাসরি 5 থেকে 50 টি বাচ্চা প্রসব করে। অন্যান্য সাপের ক্ষেত্রে যেখানে কামড় দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর রোগীকে স্বাভাবিক মনে করলেও রাসেল ভাইপার কামড় দেওয়ার পর তা হয়ে ওঠে ডেঞ্জারাস এবং এন্টিভেনোম নিলেও কত স্থানের মাংস পচন ধরে যায়।
কিভাবে রাসেল ভাইপার সাপ থেকে নিজেদের রক্ষা করবেন
রাসেলস ভাইপার থেকে বাঁচার জন্য কয়েকটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি:
- ঝোপঝাড় ও উঁচু ঘাস থেকে দূরে থাকুন এবং সবসময় পরিষ্কার পথ ব্যবহার করুন।
- হাত ও পা ঢেকে রাখা জুতা ও পোশাক পরুন, বিশেষ করে রাতের বেলা।
- হাত বা পা কোথাও রাখার আগে নিশ্চিত করুন সেখানে সাপ নেই।
- ঝোপঝাড়, পাথরের নিচে বা কাঠের স্তূপে কাজ করার সময় লাঠি ব্যবহার করুন।
- সাপের উপস্থিতি বোঝার জন্য সতর্ক থাকুন এবং সাপ দেখলে ধীরেসরে দূরে সরে যান।
- সাপের কামড় হলে দ্রুত চিকিৎসা নিন এবং সাপটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করুন।
- কৃষকদের অবশ্যই সতর্কতামূলকভাবে মাঠে কাজ করতে হবে এবং সুরক্ষা সামগ্রী সাথে রাখতে হবে।
রাসেল ভাইপার মারতে পারলে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা। যতগুলো রাসেল‘স ভাইপার মারা হবে, ততবার এই পুরস্কার দেওয়া হবে বলে এমন ঘোষণা দিয়েছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক এবং সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ।
এই সতর্কতাগুলি মেনে চললে রাসেলস ভাইপার থেকে বাঁচা সম্ভব।
এইরকম আরো অনেক তথ্যবহুল খবরা-খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে এবং ভালো লাগলে শেয়ার করুন ধন্যবাদ।